রুট রিজওয়ান অশ্বিন আফ্রিদির বছর।

 

রুট রিজওয়ান অশ্বিন আফ্রিদির বছর।

image source Newsg


২০২০ সালে করোনা ঝুঁকির কারণে বাধাগ্রস্থ হয়েছে আন্তর্জাতিক এবং ঘরোয়া ক্রিকেট। তবে করোনা সংক্রমন ঝুঁকি কিছুটা কমে যাওয়ায় জৈব সুরক্ষায় ক্রিকেট ম্যাচে ব্যস্ত থেকেছে ২০২১ সাল।


স্থগিত থাকা আইসিসি টি-২০ বিশ্বকাপ পরিবর্তিত ভেন্যুতে গড়িয়েছে মাঠে। নতুন ফর্মুলায় আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম চক্রের ট্রফি নিষ্পত্তি হয়েছে এ বছর। ২০২০ সালে জট বেধে যাওয়া ম্যাচ সমন্বয় করায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকেছে ব্যস্ত এই বছরটিতে। দুটি মেগা ইভেন্ট সম্পন্ন হওয়ায় ক্রিকেট প্রেমীদের চোখ নিব্বিস্ট ছিল ওই আসর দুটিতে।

এই বছরে ইংল্যান্ড টেস্টে হতাশ করেছে। ১৫ টেস্টের মধ্যে জিতেছে ৪টিতে। সাফল্যাঙ্ক ২৬.৭৭%। তবে অধিনায়ক জো রুট ব্যাটিংয়ে ছড়িয়েছেন দ্যুতি। ১৫ টেস্টে ৬ সেঞ্চুরি, ৪ ফিফটিতে ৬১.০০ গড়ে করেছেন ১৭০৮ রান। যেভাবে বছরটা শুরু করেছিলেন, তাতে টেস্টে এক ক্যালেন্ডার ইয়ারে সবচেয়ে বেশি রানের নতুন বিশ্বরেকর্ড স্থাপনের স্বপ্ন দেখেছেন জো রুট নিজেও।


২০০৬ সালে পাকিস্তানের মোহাম্মদ ইউসুফ টেস্টে ৯৯.৩৩ গড়ে করেছেন ১৭৮৮ রান, ১৯৭৬ সালে ক্যারিবিয় লিজেন্ডারি ভিভ রিচার্ডস করেছিলেন ৯১.০০ গড়ে ১৭১০ রান। সেই রেকর্ডটা টপকে যাওয়ার লক্ষ্য ছিল রুটের। তবে বছরের শেষ দিকে এসে অ্যাসেজ বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ইংলিশ অধিনায়কের সামনে। ৮০ রানের জন্য  ছুঁতে পারেননি তিনি মোহাম্মদ ইউসুফের সেই রেকর্ডকে।

জো রুট টেস্টে এক ক্যালেন্ডার ইয়ারে সর্বাধিক রানের রেকর্ড করতে না পারলেও টি-২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পেরেছেন পাকিস্তান টপ অর্ডার মোহাম্মদ রিজওয়ান। সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ক্রিকেটে আলো ছড়ানো এই পাকিস্তানী ২৬ ইনিংসে ১ সেঞ্চুরি, ১২ ফিফটিতে ৭৩.৬৬ গড়ে করেছেন ১৩২৬ রান। এক ক্যালেন্ডার ইয়ারে সংক্ষিপ্ত ভার্সনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ৭৩৪ রান ছিল আয়ারল্যান্ডের পল স্ট্রিলিংয়ের। সেই রেকর্ডটা টপকে গেছেন এবার রিজওয়ান।


রিজওয়ানের ওপেনিং পার্টনার বাবর আজম এবার তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন (৯৩৯ রান)। আশ্চর্য হলেও সত্য, এক ক্যালেন্ডার ইয়ারে টি-২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাকিস্তানের এই ওপেনিং জুটি ৪টি ১৫০ রানের পার্টনারশিপ উপহার দিয়েছেন। যার মধ্যে সেঞ্চুরিয়নে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তাদের পার্টনারশিপটি ১৯৭ রানের !

এক ক্যালেন্ডার ইয়ারে ২০ ওভারের আন্তর্জাতিক এবং ঘরোয়া ক্রিকেট মিলে সর্বাধিক রানের রেকর্ডেও পাল্লা দিয়েছেন রিজওয়ান-বাবর। ২০১৫ সালে ৩৬ ম্যাচে স্বঘোষিত ইউনিভার্স বস ক্রিস গেইলের ১৬৬৫ রানের রেকর্ডটা এতোদিন ছিল এক ক্যালেন্ডার ইয়ারে এই ভার্সনের ক্রিকেটে সর্বাধিক রানের রেকর্ড। সেই রেকর্ড ভেঙ্গে ২০২১ সালে রিজওয়ান করেছেন ৪৮ ম্যাচে ২০৩৬ রান। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাবর আজমের রান সেখানে ১৭৭৯!  

বছরটিতে টেস্ট, টি-২০'র তুলনায় ওয়ানডেতে ম্যাচের সংখ্যা ছিল তুলনামুলক কম। আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগের দ্বি-পাক্ষিক সিরিজের ম্যাচগুলো ছাড়া এ বছর ওয়ানডে ম্যাচ খুব একটা হয়নি। তাই ৭০৫ রান করে আইরিশ ব্যাটার পল স্ট্রিলিং এই সংস্করণের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।

এই বছরটা টেস্টে দারুণ কাটিয়েছেন ভারতের অফ স্পিনার রবিচন্দন অশ্বিন। ৪শ' উইকেট ক্লাবের সদস্যপদ পেয়েছেন তিনি এ বছর। ধারাবাহিক বোলিংয়ে বছরটিতে সর্বাধিক ৫৪ উইকেট শিকার করেছেন। টেস্টে পাকিস্তানের পেস জুটি শাহীন শাহ আফ্রিদি-হাসান আলীও ছড়িয়েছেন আলো এই বছরটিতে। শাহিন শাহ আফ্রিদির এই বছরে শিকার ৪৭টি উইকেট, সেখানে হাসান আলী পেয়েছেন ৪১টি উইকেট।

ওয়ানডেতে শ্রীলংকার বিস্ময় পেসার হিসেবে এই বছর আবির্ভুত হয়েছেন দুশমন্ত চামিরা। সর্বাধিক ২০ উইকেট তার। টি-২০তে বোলিংয়ে আলো ছড়িয়েছেন লংকান লেগ স্পিনার হাসারাঙ্গা। ২২ ম্যাচে ৩৬ উইকেট শিকার করেছেন এই লংকান। সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক টোয়েন্টি-২০ ম্যাচে রশিদ খান দ্যুতি অব্যাহত থেকেছে এ বছরেও। তার শিকার সংখ্যা এই বছরটিতে ৭৫টি উইকেট! ভাবা যায়!

এই বছরে নিউ জিল্যান্ডের বাঁ হাতি স্পিনার আজাজ প্যাটেল করেছেন বিস্ময় বোলিং। জন্মস্থান মুম্বাইয়ে ভারতের বিপক্ষে ইনিংসে ১০ উইকেটে (১০/১১৯) জিম লেকার এবং অনিল কুম্বলের রেকর্ডকে করেছেন স্পর্শ নিউ জিল্যান্ডের নাগরিকত্ব পাওয়া এই স্পিনার। বছরের শেষ দিকে এসে ওয়ানডে এবং টি-২০-এর অধিনায়কত্ব হারিয়েছেন বিরাট কোহলি। এই দুই ভার্সনের ক্যাপ্টেনসি বিসিসিআই তুলে দিয়েছে রোহিত শর্মার হাতে।


তবে ১১ টেস্টে ৭টিতে জিতে ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি এই বছরে টেস্টে সবচেয়ে সফল অধিনায়ক। যদিও সাফল্যের নিক্তিতে বছরে সেরা অধিনায়ক নিউ জিল্যান্ডের কেন উইলিয়ামসন। তার নেতৃত্বে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের রাজদন্ড হাতে উঠেছে নিউ জিল্যান্ডের। 


টি-২০তে সেখানে বাবর আজমের নেতৃত্বে ২৯ ম্যাচের মধ্যে ২০টিতে সাফল্যের হাসি হেসেছে পাকিস্তান।   তিন ফরমেটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মিলিয়ে পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমের সাফল্যের পাল্লাটাও সবার চেয়ে ভারী। ৪৩ ম্যাচে ২৯ জয়ে যে রেকর্ডে তার প্রতিদ্বন্দ্বী নেই কেউ।     

  

source Newsg

  

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

نموذج الاتصال