দেশ-বিদেশে ষড়যন্ত্র চলছে: প্রধানমন্ত্রী,অবকাঠামো উন্নয়নের মাইলফলক বছর হবে 2022

ঢাকা: বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা রুখে দিতে দেশ-বিদেশে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের উন্নয়ন অনেকেরই সহ্য হচ্ছে না।

শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বর্তমান সরকারের তৃতীয় বর্ষপূতি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন তিনি। 

Prime Minister Sheikh Hasina
Prime Minister Sheikh Hasina

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়ক বেয়ে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এটা অনেকেরই সহ্য হবে না বা হচ্ছে না। দেশ-বিদেশে বসে বাংলাদেশবিরোধী শক্তি, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি তাই নানা ষড়যন্ত্র করছে এই অগ্রযাত্রাকে রুখে দেওয়ার জন্য। 

মিথ্যা ও কাল্পনিক তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মিথ্যা-বানোয়াট-কাল্পনিক তথ্য দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। বিদেশে আমাদের উন্নয়ন সহযোগীদের ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছে। ’

ষড়যন্ত্রের বিষয়ে জনগণকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘কেউ যাতে মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সেদিকে আমাদের সকলকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। আমাদের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে কোনভাবেই ব্যাহত হতে দেওয়া যাবে না। জনগণই ক্ষমতার উৎস। আমরা জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করি। তাই জনগণের সঙ্গেই আমাদের অবস্থান। ’

২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মন্ত্রিসভা গঠন করে দলটি।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ক্ষমতায় আসে দলটি। সে সময় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন শেখ হাসিনা।
পরবর্তীকালে ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবারও ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। এরপর থেকে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আছে দলটি এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন শেখ হাসিনা।
স্বাধীনতার পর থেকে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন শেখ হাসিনা। সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ।

২০২২ সাল বাংলাদেশের জন্য অবকাঠামো উন্নয়নের মাইলফলক বছর হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বর্তমান সরকারের তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল একটি শোষণ ও বঞ্চনামুক্ত গণতান্ত্রিক এবং অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গঠন করা। যেখানে সব ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণি-পেশার মানুষ সুখে-শান্তিতে বসবাস করবে। প্রতিটি মানুষ অন্ন-বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসার সুযোগ পাবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি তাকে সপরিবারে হত্যা করে। তাকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করে দেওয়া হয়। তারপর হয় অনেক চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র।


তিনি বলেন, সামরিক শাসনের যাঁতাকলে নিষ্পেষণ, গণতন্ত্রহীনতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-বিচ্যুতি, ইতিহাস বিকৃতিসহ শাসকদের নানা অপকীর্তি প্রত্যক্ষ করেছে এ দেশের মানুষ। জনগণের সম্পদ লুটপাট করে, তাদের বঞ্চিত রেখে, ৩০-লাখ শহিদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করে বাংলাদেশকে পরনির্ভরশীল করে রেখেছিল তারা।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের বিয়োগান্তক ঘটনার পর ৬ বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে আমি ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে আত্মনিয়োগ করি। আমার একটাই লক্ষ্য ছিল, জাতির পিতার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করে বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফোটানো।

দেশ-বিদেশে ষড়যন্ত্র চলছে: প্রধানমন্ত্রী,অবকাঠামো উন্নয়নের মাইলফলক বছর হবে 2022

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তারুণ্যের শক্তিই পারবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম এগিয়ে যাবে মাথা উঁচু করে ভবিষ্যতের পানে।

বর্তমান সরকারের তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।  
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বর্তমান এবং আগামী দিনের সব কার্যক্রমের লক্ষ্য হচ্ছে নতুন প্রজন্মের জন্য একটি সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ বিনির্মাণ। অফুরন্ত জীবনীশক্তিতে বলীয়ান তরুণ প্রজন্মই পারে সকল কূপমণ্ডুকতা এবং প্রতিবন্ধকতা দূর করে একটি প্রগতিশীল অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে। যে বাংলাদেশের স্বপ্ন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেখেছিলেন। 

তিনি বলেন, গত ১৩ বছরে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। দারিদ্র্য দূরীকরণ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন, মাতৃমৃত্যু-শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস, গড় আয়ু বৃদ্ধি, নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষার হার বৃদ্ধিসহ নানা আর্থ-সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ আজ দক্ষিণ এশিয়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছে। এটা সম্ভব হয়েছে আমাদের ওপর আস্থা রাখার ফলে। 
শেখ হাসিনা বলেন, পর পর তিনবার রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ দিয়ে আপনারা উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সহায়তা করেছেন। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে আমরা একটি কল্যাণকামী, উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি, যাতে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশগুলোর কাতারে সামিল হতে পারে। এজন্য অতীতে যেমন আপনারা আমাদের সঙ্গে ছিলেন, ভবিষ্যতে আমাদের সঙ্গে থাকবেন, এ আশাবাদ ব্যক্ত করছি। 

করোনাভাইরাসের নতুন ঢেউ থেকে মহান আল্লাহ মানবজাতিকে রক্ষা করুন-  তার বক্তব্যে এ প্রার্থনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

Bangla news - 24
এইউএ/আরএইচ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

نموذج الاتصال