নিরাপত্তা পরিষদে ভাষণ দিচ্ছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে দেওয়া এই ভাষণে কিয়েভের ক্ষমতাসীন সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নিতে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ইউক্রেন সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা দখলের আহ্বান পুতিনের
পুতিন বলেন, ‘ইউক্রেনের সশস্ত্র সেনাদের উদ্দেশ্যে আমি আবার বলতে চাই: এই নব্য নাৎসীদের আপনাদের শিশু, আপনাদের স্ত্রী, আপনাদের বৃদ্ধ মানুষদের মানব-ঢাল হিসাবে ব্যবহার করতে দেবেন না। নিজেদের হাতে ক্ষমতা তুলে নিন। কিয়েভের ওই মাসকাসক্ত এবং নব্য নাৎসী দলের সাথে কথা বলার চেয়ে আমরা এবং আপনারা কথা বললে একটা চুক্তিতে পৌঁছন অনেক সহজ হবে। ’
এছাড়াও পুতিন তার ভাষণে ইউক্রেন সরকার এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে ব্যঙ্গবিদ্রূপ করে তাদের ‘নব্য-নাৎসী’ এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে রুশ বিরোধী বাহিনী ‘ব্যান্ডেরাইট’ বলে উল্লেখ করেন এবং বলেন, ‘তারা সন্ত্রাসীদের মত আচরণ করছে। রাশিয়া, শান্তিকামী জনগণকে হত্যা করছে এমন অভিযোগ করে তারা এই সাধারণ মানুষকে ঢাল হিসাবে তুলে ধরে নিজেদের আচরণ ঢেকে রাখছে। এটা সুনিশ্চিত যে বিদেশী পরামর্শদাতাদের সুপারিশে তারা এসব কিছু করছে। সবার উপরে তাদের পরামর্শ দিচ্ছে আমেরিকা। ’
ইউক্রেনে ৩০ দিনের জরুরি অবস্থা জারি!
ইউক্রেনে ৩০ দিনের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। দেশটির স্থানীয় সময় ২৩ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) ইউক্রেন সময় রাত ১০ নাগাদ এ সংক্রান্ত একটি বিল পার্লামেন্টে পাস হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এখন থেকেই এই জরুরি অবস্থা কার্যকর হবে।
যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, জরুরি অবস্থা জারির ফলে জনসাধারণের ব্যক্তিগত নথিপত্র পরীক্ষা করা যাবে। এ ছাড়া এই বিল পাসের মাধ্যমে সরকারকে কারফিউ জারির ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
ইউক্রেন সরকারের পক্ষ থেকে এও বলা হয়েছে, এতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে। তবে এর অর্থ হলো, সরকারের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে ইউক্রেনের রিজার্ভ বাহিনী দেশ ত্যাগ করতে পারবে না।
অবশ্য, ইউক্রেন সরকার যে জরুরি অবস্থা জারি করেছে তা দেশটির সব অঞ্চলে কার্যকর হবে। তবে দেশটির যে দুটি অঞ্চলকে রাশিয়া স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে এই দুটি অঞ্চলে ২০১৪ সাল থেকেই জরুরি অবস্থা জারি রয়েছে।
ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি রাশিয়া
এর আগে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে পুতিনকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে পুতিনের শর্তে তিনি রাজি হবেন কি না তা এখনও জানা যায়নি।
আলোচনার ভেন্যু হিসাবে মিনস্ক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ২০১৪ সালে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল নিয়ে সংঘাত অবসানের চেষ্টায় এই মিনস্কেই একটা চুক্তি সই হয়েছিল। ইউক্রেন আক্রমণ করে রাশিয়া সেই চুক্তি ভঙ্গ করেছে।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এর আগে বলেছিলেন, ইউক্রেনের সৈন্যরা অস্ত্র না নামানো পর্যন্ত কোনো আলোচনা হবে না।