রোজাদারকে ইফতার করালে যে ফজিলত, ইফতারে স্বাস্থ্যকর ৩ পদ

 

Ramadan Kreem

রমজান মাসে নেক আমলের সওয়াব আল্লাহ তাআলা অনেক বেশি বাড়িয়ে দেন। পবিত্র এই মাসে আল্লাহর বান্দারা পারস্পরিক উত্তম আমলের প্রতিযোগিতা করে।


রমজানের রোজা পালন শেষে রোজাদাররা ইফতার করে। ইফতারের সময় অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

 এই সময়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করলে আল্লাহ বিশেষভাবে কবুল করেন। তা ছাড়া রোজাদারকে ইফতার করানো অত্যন্ত সওয়াবের কাজ।


রোজাদারকে ইফতার করালে যে ফজিলত, ইফতারে স্বাস্থ্যকর ৩ পদ

যায়েদ ইবনে খালেদ আল-জুহানি (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন- নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোন রোজাদার ইফতার করাবে সে রোজাদারের সম পরিমাণ সওয়াব পাবে; রোজাদারের সওয়াব থেকে একটুও কমানো হবে না।’ 

(সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৮০৭; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৭৪৬; ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৮/২১৬; সহিহ আল-জামে, হাদিস : ৬৪১৫)

শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া বলেন, ‘রোজাদারকে ইফতার করানো দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে- তাকে পেট ভরে তৃপ্ত করানো।’ (আল ইখতিয়ারাত, পৃষ্ঠা : ১৯)

সালফে সালেহিন খাবার খাওয়ানোর ক্ষেত্রে অগ্রণী ছিলেন এবং তাঁরা এটাকে মহান ইবাদত মনে করতেন। জনৈক সলফে সালেহিন বলেছেন: “দশজন সাথীকে দাওয়াত দিয়ে তাদের পছন্দসই খাবার খাওয়ানো আমার কাছে দশজন গোলাম আজাদ করার চেয়ে প্রিয়।”


সালফে সালেহিনের অনেকে নিজের ইফতার অন্যকে খাওয়াতেন। এদের মধ্যে রয়েছেন- ইবনে উমর, দাউদ আল-তাঈ, মালিক বিন দিনার, আহমাদ ইবনে হাম্বল। ইবনে উমর এতিম ও মিসকীনদের সঙ্গে না নিয়ে ইফতার করতেন না।

সালফে সালেহিনদের কেউ কেউ তার নিজের ইফতার তার সঙ্গী সাথীদেরকে খাওয়াতেন এবং নিজে তাদের খেদমত করতেন। এদের মধ্যে অন্যতম- ইবনুল মুবারক।

আবু সাওয়ার আল-আদাওয়ি বলেন, বনি আদি গোত্রের লোকেরা এই মসজিদে নামায পড়ত। তাদের কেউ কখনো একাকী ইফতার করেনি। যদি তার সাথে ইফতার করার জন্য কাউকে সাথে পেত তাহলে তাকে নিয়ে ইফতার করত। আর যদি কাউকে না পেত তাহলে নিজের খাবার মসজিদে নিয়ে এসে মানুষের সাথে খেত এবং মানুষকেও খেতে দিত।


খাবার খাওয়ানোর ইবাদতের মাধ্যমে আরও অনেকগুলো ইবাদত পালিত হয়। নিমন্ত্রিত ভাইদের সাথে হৃদ্যতা ও ভালবাসা। যে হৃদ্যতা ও ভালোবাসা জান্নাতে প্রবেশের কারণ। যেমনটি নবী (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা ঈমান আনা ছাড়া জান্নাত যেতে পারবে না। আর পারস্পারিক ভালোবাসা ছাড়া তোমাদের ঈমান হবে না।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৫৪)


দাওয়াত খাওয়ানোর মাধ্যমে নেক লোকদের সাহচর্য অর্জিত হয়। আপনার খাবার খেয়ে তারা নেককাজের শক্তি পায়, এতে আপনার সওয়াব হয়। আল্লাহ তাআলা আমাদের অনেক বেশি তাওফিক দান করুন। আমিন। (সংগৃহীত)


রমজানে ভোরে সেহরি ও সন্ধ্যায় আজানের পর ইফতার করার রেওয়াজ। এই সময়ে সঠিক খাদ্য ও পানীয় নির্বাচন করা ভীষণ জরুরি। এতে সারাদিন রোজা রেখেও অসুস্থ হবেন না।

অনেকেই ইফতারিতে বিভিন্ন মুখোরোচক খাবার খান। যা শরীরের পক্ষে মোটেই ভালো নয়। এসব খাবার খেলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। কারণ এ ধরনের খাবারে কোনো পুষ্টিগুণ থাকে না। বরং এগুলো শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

তাহলে কী খাবেন ইফতারিতে? যেহেতু প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই রোজা রাখতে হচ্ছে , তাই সবাইকে শরীরের প্রতি দিতে হবে বাড়তি নজর। এর জন্য পেটও ভরবে আর হজম করতেও অসুবিধা হবে না, চাই এমন খাবার।


চলুন তবে জেনে নেয়া যাক এমনই তিনটি স্বাস্থ্যকর ইফতারের রেসিপি-

ফলের সালাদ

পছন্দ অনুযায়ী ফল বাছাই করে সালাদ বানাতে পারেন। এতে শরীরে জলের ভারসাম্য বজায় থাকবে, শরীর থেকে দূষিত পদার্থগুলো বেরিয়ে যাবে। টুকরো করে কাটা ফলের মধ্যে সামান্য চাট মশলা, পুদিনা পাতা, ভাজা তিল ছড়িয়ে খেতে পারেন।


ওটসের পায়েস

ওটস প্রোটিন ও ফাইবারে ভরপুর। এটি খেলে অনেকক্ষণ পেট ভর্তি থাকে। একটি কড়াইতে ওটস নিয়ে হালকা নাড়াচড়া করে নিন। এবার দুধ সামান্য গাঢ় করে তার মধ্যে ভেজে রাখা ওটস দিয়ে ফুটিয়ে নিন। পরিমাণ মতো চিনি দিয়ে দিন। চিনির পরিবর্তে খেজুর বাটা দিলে আরো ভালো। পায়েস ঘন হয়ে গেলে উপরে পছন্দের ড্রাই ফ্রুটস ছড়িয়ে পরিবেশন করুন ওটসের পায়েস।


ডাব-লেবুর শরবত

রোজা রাখলে সারাদিন জলও খাওয়া যায় না। তবে গরমের দিনে শরীরে জলের ঘাটতি হলেই মুশকিল। তাই সেহরি ও ইফতারের সময়ে বিভিন্ন রকম শরবত রাখা ভীষণ জরুরি। একটি গ্লাসে ডাবের জল নিয়ে তাতে পরিমাণ মতো মধু, লেবুর রস, বিটনুন আর পুদিনা পাতা ভালো করে মিশিয়ে নিন। এই পানীয় খেলে শরীর ঠান্ডা থাকবে।



Source Manobkantha

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

نموذج الاتصال